SIM ওর সম্পূর্ণ রূপ হল Subscriber Identification Module। আর eSIM এর পূর্ণ রূপ হল Embedded Subscriber Identification Module। একে embedded Universal Integrated Circuit Card (eUICC) ও বলা হয়। অর্থাৎ eSIM হল এমন একটি চিপ/সার্কিট যেটি কোনো ডিভাসের সাথে যুক্ত থাকে এবং সেটি ফোন থেকে সাধারণ SIM card এর মত Phone থেকে আলাদা করা যায় না।
eSIM Apple Device এ ব্যবহার করার দরূন একে Apple SIM নামেও ডাকা হয়। কিন্তু তাই বলে যে Apple নিজেই এই eSIM তাদের ডিভাইসে ব্যবহার করেছে এমনটি নয়। Google কেও তাদের বেশ কিছু ডিভাইসে এই eSIM ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
কোনো কিছু সম্পর্কে জানার পূর্বে প্রথমেই আমাদের মাথায় যেটি ঘুরপাক খায় সেটি হল আকার বা আকৃতি! eSIM এর আকার কল্পনা করার ক্ষেত্রে আমাদের কাছে থাকা বর্তমান যে SIM টি আছে সেটির দিকে লক্ষ্য করা যাক। সব থেকে ছোট SIM টি হল nano SIM যার দৈর্ঘ্য ১২.৩০ mm আর প্রস্থ ৮.৮ mm। আর eSIM এর চিপটি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে যথাক্রমে ৬ mm ও ৫ mm। তাহলে একবার কল্পনাই করুন এটি কত ক্ষুদ্র হতে পারে।জেনে আশ্চর্য হবেন যে প্রথম দিকে যে SIM ব্যবহার করা হত তার আকার বর্তমানের Credit card এর সমান।
প্রযুক্তি উন্নয়নের সাথে সাথে ইলেকট্রিক ডিভাইস দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে ও সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করছে। eSIM কে সে দিক থেকে আসির্বাদও বলা চলে। কেননা এই ছোট চিপটি চাইলে হাতে থাকা ঘড়ির মধ্যেও সেলুলার নেটওয়ার্ক কানেক্ট করা সম্ভব হবে।
এখন বর্তমানে এসে একবার বাস্তব জীবনের দিকেই তাকান! হোক সে খুব ক্ষুদ্র nano SIM সেটি আমরা যখন ফোনের মধ্যে প্রবেশ করাই তার জন্য একট SIM tray দরকার পড়ে। যার জন্য আমাদের ডিভাইসের বেশ কিছু অংশ SIM tray এর জন্য বরাদ্দ করতে হয়। কিন্তু eSIM এর বদৌলতে এই বাড়তি অংশ টুকুর জন্য জয়গা অপচয় হচ্ছে না। তারপর আশা যাক waterproof এর কথায়। যেখানে SIM Tray নেই সেইখানে SIM tray দিয়ে পানি প্রবেশের প্রশ্নই ওঠে না। হয়ত waterproof ডিভাইস আরেকটু নতুন মোড় পেল উন্নয়নের।
আসুন জেনে নেওয়া যাক eSIM কীভাবে কাজ করেঃ
প্রশ্ন জাগতেই পরে যদি SIM card খুলতেই না পারি তাহলে operator কিংবা phone number চেঞ্জ করব কীভাবে?
eSIM মূলত M2M (Machine to Machine) টেকনোলজি (পরবর্তী কোনো একটি পোস্টে M2M নিয়ে আলোচনা করা হবে) এর মাধ্যমে চালিত হয় যার মধ্যমে ব্যবহাকারির হস্তক্ষেপ ছাড়াই information পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখে।
ব্যবহারকারী যখন স্থান পরিবর্তন করবেন। যেমনঃ অনেকে বিদেশে ভ্রমণ করতে যান। সেখানে গেলে দেশের মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখতে নতুন SIM ও নম্বরের প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে তিনি SIM পরিবর্তন না করেই eSIM এর বদৌলতে নতুন অপারেটরের নতুন নম্বরে সাবসক্রিপশন করে চালাতে পারেন। অর্থাৎ eSIM এর অভ্যন্তরে কিছু information থাকে যা ব্যবহারকারীর সাথে অপারেটরের সংযোগ অব্যাহত রাখে এবং ব্যবহারকারীর চাহিদা মোতাবেক নিজেই সেই ইনফরমেশন পরিবর্তন করে নেয়। অর্থাৎ একের ভেতর সব!
বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো সেলুলার নেটওয়ার্ক সার্ভিস/অপারেটর এই সুবিধা এখনও চালু করেনি। তবে আশা করা হল আর কয়েক বছরের মধ্যেই হয়ত eSIM এর ব্যবহারির সংখ্যা খুব দ্রুতই বাড়তে শুরু করবে। আর অপারেটরগুলোও ব্যবহারকারীর চাহিদা মেটাতে eSIM সার্ভিসও চালু করবে।
চেষ্টা করেছি eSIM নিয়ে সংক্ষেপে নিজের মত করে সমস্ত কিছু তুলে ধরতে। অনেক কিছুই বাদ পড়তে পারে। আরও বেশি জানতে Google এর বিকল্প নেই। আমি নিজেও google করে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে পড়ে এই টপিক সম্পর্কে অল্প কিছু হলেও লেখার ক্ষমতা অর্জন করেছি। ভাল থাকবেন সবাই। আজ এই পর্যন্তই।