কার্নেল ও এর কার্যক্রম – জানুন বিস্তারিত।

বর্তমানে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন কিন্তু কার্নেলের নাম শোনেননি এমন মানুষ খুব কম খুঁজে পাওয়া যাবে। শুধু মাত্র স্মার্টফোন নয়। কম্পিউটারেরও অনেক ব্যবহারকারীরাও এই শব্দটির সাথে পরিচিত। কারণ বর্তমানে প্রায় সকল ডিজিটাল ইলেক্ট্রিক ডিভাইসেই এটি থাকে।
তো আমি আজ এই কার্নেল সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করার চেষ্টা করব।

  • কার্নেল কি?

কার্নেল হলো এক প্রকার সফটওয়্যার যা ডিভাইসের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরি করে।
তাই এটিকে আপনি একটি সেতু বা ব্রিজের সাথে তুলনা করতে পারেন।মনে করুন নদীর এক পাঁড় হলো হার্ডওয়্যার আর অন্য পাঁড় হলো সফটওয়্যার। তো এখন একপাঁড় হতে অন্য পাঁড়ে যেতে হলে বা এদের মাঝে যোগাযোগ সৃষ্টি করতে হলে অবশ্যই একটি সেতু বা ব্রিজের প্রয়োজন হবে।এই ব্রীজটাই হলো কার্নেল।
আপনি যখনই কোনো হার্ডওয়্যারের উপর কোনো সিস্টেম চালাবেন তখন অবশ্যই কার্নেলের প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ হার্ডওয়্যারকে কার্যক্ষম করার জন্য কার্নেলের দরকার হয়।

আশাকরি, কার্নেলের ধারণাটা একটু হলেও স্পষ্ট হয়েছে।

  • কার্নেল কিভাবে কাজ করে?

আপনার ফোনে তো বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রাংশ রয়েছে যেমন ডিসপ্লে,স্পিকার,ক্যামেরা,র‍্যাম,রম,প্রসেসর ফ্ল্যাশ লাইট ইত্যাদি।কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন যে আপনার একটি মাত্র ক্লিকেই এগুলা কিভাবে কাজ করে?
তো চলুন এ সম্পর্কে একটু আলোচনা করি।

আমরা হার্ডওয়্যারকে ব্যবহার করি সফটওয়্যারের মাধ্যমে, আর সফটওয়্যার হার্ডওয়্যারকে ব্যবহার করে কার্নেলের মাধ্যমে।

মনে করুন আপনি এখন অডিও রেকর্ড করবেন।তো অডিও রেকর্ড করার জন্য আপনি একটি অ্যাপ্লিকেশন ওপেন করলেন।কিন্তু অডিও রেকর্ড করার জন্য তো অবশ্যই আপনার ফোনের মাইক্রোফোনের দরকার হবে।সো যখনই আপনি রেকর্ড করার অ্যাপ্লিকেশনটি ওপেন করবেন তখনই ওই অ্যাপ্লিকেশনটি আপনার ফোনের মাইক্রোফোনের অ্যাক্সেস চাইবে।
এখন এই অ্যাপ্লিকেশনকে আপনার ফোনের মাইক্রোফোনের অ্যাক্সেস দেবার জন্য নিশ্চয় এক অথোরিটির প্রয়োজন পড়বে যা অনুমতি প্রদান করতে পারে।
রেকর্ড করার পর অডিও ফাইলটি সেভ করার জন্যও তো ঐ অ্যাপ্লিকেশনটির অনুমতির প্রয়োজন হবে।আর এ সকল অনুমতি দিবে হচ্ছে কার্নেল।অর্থাৎ আপনি কমান্ড দিবেন সফটওয়্যারকে, আর সফটওয়্যার কমান্ড দিবে কার্নেলকে। আর কার্নেল সেই কমান্ড অনুযায়ী কাজ আদায় করে নেবে হার্ডওয়্যারের কাছ থেকে।

আবার যখন আপনি বড় কোনো সাইজের সফটওয়্যার ব্যবহার করেন তখন বেশি র‍্যামের প্রয়োজন হয়। আবার যখন ছোট কোনো সাইজের সফটওয়্যার ব্যবহার করেন তখন অল্প র‍্যামের প্রয়োজন হয়। তো কোন সফটওয়্যারের জন্য কতটুকু র‍্যামের প্রয়োজন সেটাও কার্নেল ঠিক করে দেয়।

তাহলে এখন অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন যে কার্নেল আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস।

বিভিন্ন প্রকার অপারেটিং সিস্টেমের জন্য বিভিন্ন প্রকার কার্নেল থাকে।যেমন উইন্ডোজের জন্য N.T কার্নেল,এন্ড্রয়েডের জন্য Linux ,ম্যাকের জন্য Darwin কার্নেল ইত্যাদি।
যেহেতু লিনাক্স একটি ওপন সোর্স তাই আপনি আপনার ফোনে বিভিন্ন প্রকার থার্ড পার্টি কার্নেল ইনস্টল করতে পারবেন।এমন কিছু থার্ড পার্টি কার্নেল আছে যা আপনাকে স্টক কার্নেলের চেয়েও বেশি সুবিধা দিতে সক্ষম।কার্নেলের সাহায্যে আপনার মোবাইলের প্রসেসরের স্পিড কমিয়ে ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়াতে পারবেন।কার্নেল পরিবর্তন করে আপনার ডিভাইস থেকে দ্রুত গতির পারফর্মেন্সের জন্য ওভার ক্লক করতে পারবেন,স্পিড স্লো করতে চাইলে আন্ডারক্লক করতে পারবেন ইত্যাদি।কাস্টম কার্নেল ব্যবহার করার সময় একটু সতর্কতার সাথে করবেন।ভালো ডেভেলপারের তৈরি করেছে এমন কার্নেল ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।

কাস্টম কার্নেল ইনস্টল করার ফুল টিউটোরিয়াল দেওয়ার চেষ্টা করব।


আশা করি বুঝতে পেরেছেন।কোনো কিছু বুঝতে সমস্যা হলে কমেন্ট বক্স তো আছেই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Previous Post

DCL C483 – প্রথম দর্শনের অনুভূতি!

Next Post

নোট ৭ প্রো কে টেক্কা দিতে যে ডিভাইস আনতে চলেছে রিয়েলমি

Related Posts

KZ HD9 রিভিউ – সাধ্যের মধ্যে একটি ব্যালেন্সড ইয়ারফোন!

বাজারে হাইপ তোলা ইয়ারফোনগুলার মধ্যে KZ HD9 অন্যতম। আসুন আজকে HD9 নিয়ে প্যাঁচাল পাড়ি। আনবক্সিংঃ প্যাকেজিং তো এনভাইরনমেন্টাল…
পড়ুন

মোবাইল ফোনের রেডিয়েশন কি? কিভাবে বাঁচবেন?

মোবাইল ফোন মানেই তারবিহীন প্রযুক্তি। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের মাধ্যমেই এইগুলা কাজ করে থাকে। Electromagnetic wave বা তড়িৎচৌম্বকীয় তরঙ্গ মানে…
পড়ুন