মোবাইল ফোন মানেই তারবিহীন প্রযুক্তি। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের মাধ্যমেই এইগুলা কাজ করে থাকে। Electromagnetic wave বা তড়িৎচৌম্বকীয় তরঙ্গ মানে হচ্ছে কোন একটা উৎস হতে তরঙ্গ বিকিরিত হয় য ইলেক্ট্রিক ও ম্যাগনেটিক দুইটা ফিল্ড বা ক্ষেত্র থকে এবং তারা পরস্পরের সাথে সমকোণে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
প্রত্যেকটা ফোনেই এক বা একাধিক এন্টেনা থাকে। টাওয়ারে সিগনাল পাঠানো এবং টাওয়ার থেকে সিগনাল গ্রহণ করার জন্য। এছাড়াও ওয়াইফাই বা ব্লুটুথ এর মত তারবিহীন(ওয়্যারলেস) প্রযুক্তিতেও ফোন কাজ করে। এই সবগুলো কাজই হয় ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের মাধ্যমে। প্রত্যেকটি তরঙ্গেরই আবার একটা ক্ষমতা থাকে, একটা ডিভাইস থেকে তরঙ্গ অন্য কোথাও পাঠানোর সময় বা গ্রহণ করার সময় ওই ক্ষমতার কিছু না কিছু অংশের অপচয় ঘটে। যে পরিমাণ তরঙ্গ একটি ফোন অন্য কোথাও পাঠালো বা গ্রহণ করলো তার পুরাটুকু ফোনটি গ্রহণ করতে পারে না যা আশেপাশে বিকিরিত হয়ে যায়। এছাড়াও যখন এন্টেনাগুলো পুরোদমে কাজ করে (যেমন- কথা বলার সময়) তখন ও এই বিকিরণের মাত্রা বেড়ে যায়। রেডিও ফ্রিকয়েন্সি এনার্জি এক্সপোজার মাপার জন্য ব্যাবহার করা হয় SAR value । SAR Value এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Specific Absorption Rate অর্থাৎ আপনার শরীরের এক কিলোগ্রাম টিস্যু কতখানি রেডিয়েশন সহ্য করতে পারে বা পারবে তার একটা আনুমানিক পরিমাণ প্রকাশ করা হয় এটা দিয়ে। আবার SAR value সবসময় এক রকম হয় না। ডিভাইসটি যখন নিশ্চল বস্থায় থাকে তখন এক রকম, ওয়াইফাই ব্যাবহার করলে এক রকম, কথা বলার সময় আরেকরকম। যেই সময় SAR value সবচেয়ে বেশি হয় ওইটাকেই কাউন্ট করা হয়, এর নিচের গু্লো কাউন্ট হবে না।
একেক দেশের আবহাওয়া ও মানুষের প্রকৃতি অনুযায়ী এই ভ্যালু কম বেশি হতে পারে। আবার একেক দেশে এটা পরিমাপের পদ্ধতিও আলাদা হতে পারে। সব দেশেই এটা নির্ধারণ করা থাকে যে, একটা মোবাইল কতটুকু পর্যন্ত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পাওয়ার বিকিরণ করতে পারবে। অর্থাৎ SAR value এর লিমিট ক্রস করলে সেই মোবাইল বাজারজাত করা যাবে না।
১ গ্রাম টিস্যুর (মানবদেহের টিস্যু) উপর 1.6W/KG (IEEE এর মতে), 2.0W/KG (ICNRP এর মতে) পর্যন্ত বা তার নিচে SAR value হলে সেটা মানুষের সহনীয় পর্যায়ে থাকে। [এইখানে একটা ব্যাপার পরিষ্কার করে দেওয়া ভালো যে, দুইটি সংস্থার হিসাব করার ধরন দুই রকম] তার উপরে গেলে সেটা মানুষের নানা শারীরিক ক্ষতি করতে পারে।
যেভাবে আপনার ফোনের S.A.R ভ্যালু দেখবেন-
*#০৭# ডায়াল করে।
*যদি এভাবে না আসে তাহলে সেটিং-এবাউট ফোন-লিগ্যাল ইনফরমেশন-আর এফ এক্সপোজার ইনিফরমেশন এইখানে গিয়েও দেখতে পারেন।
যদি কেউ রিস্ক নিতে না চান তাহলে নিচের স্টেপ গুলা ফলো করতে পারেন-
• রাতে মোবাইল মাথার কাছে নিয়ে ঘুমাবেন না।
• মোবাইল ডেটা অন করে ফোনে কথা বলবেন না।
• ইয়ারফোন ব্যবহার করতে পারেন কথা বলার জন্য।
• টানা অনেকক্ষণ কথা বলবেন না ফোনে।
• ফোনের চার্জ ১০% এর নিচে চলে আসলে বিকিরণের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই ফোনের চার্জ ১০% কম হলে ফোনে কথা বলবেন না।