আপনার স্মার্ট ফোনের ব্যাটারির সঠিক যত্ন নিচ্ছেন তো?আপনার ব্যাটারি আপনার উপর কতটুকু সন্তুষ্ট?

যারা নতুন ফোন কেনে তারা ব্যাটারি ব্যাকআপ কে বেশিই প্রাধান্য দিতে চায় বা বেশি ব্যাটারি ব্যাকআপ দেয় এমন ফোন কিনতে চায় বা কিনে থাকে।কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করে

“নতুন ফোন কেনার সময় চার্জ ভাল থাকতো, এখন আর আগের মত চার্জ থাকে না, ব্যাটারি অনেক ড্রেন হচ্ছে,চার্জ হতে বেশি সময় নিচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি….।”

তো তাদের জন্য ছোট ছোট কয়েকটা টিপস।আশা করি আপনাদের একটু হলেও কাজে লাগবে।

★প্রথমত বলে রাখি,অনেকেই মনে করেন যে ফোন কেনার পরে ৬-৮ ঘন্টা চার্জ করা বাধ্যতামূলক।কিন্তু বিশ্বাস করেন ভাই এমন ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই যে কেনার পরে ৬-৮ ঘন্টা চার্জ করতেই হবে।আপনি যদি ফোন কিনে চার্জ না করেই ব্যাবহার করতে থাকেন তাতেও কোনো সমস্যা নাই,আপনার যেমন ইচ্ছা তেমন।

★আপনি যদি প্রতিদিন আপনার ফোনকে ০% চার্জে এনে একেবারে ফোন বন্ধ করে চার্জে লাগান, তাহলে এটা হবে আপনার সবচেয়ে বড় ভুল।আমি আপনার কাছে অনুরোধ করছি, যদি আপনার এমন অভ্যাস থাকে তাহলে তা আজ থেকেই পরিহার করুন।এ অভ্যাসটি আপনার ফোনের ব্যাটারির উপরে অনেক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।১৪-১৫% এ আসলে আপনার ফোন আবার চার্জে লাগান।

★আপনার ফোনের ব্যাটারিকে সবসময় ১০০% চার্জ করবেন না।যদিও এখনকার লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারিতে এমন নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই।তবুও ৮০%-৯০% হলেই আপনার ফোনটিকে ডিসচার্জ করুন।

★আপনার ফোন কখনোই বক্সের দেওয়া চার্জার ছাড়া অন্য কোনো চার্জার ব্যাবহার করবেন না(বক্সের মধ্যে দেওয়া চার্জার দিয়ে অন্য ফোনও চার্জ দেওয়ার দরকার নাই)।যদি কোনো কারনে বক্সের অরিজিনাল চার্জার নষ্ট হয়ে যায় তাহলে অরিজিনাল চার্জারের মত একই ভোল্টেজ+অ্যাম্পিয়ারের চার্জার কিনে ব্যাবহার করবেন।তবে সাবধান,বাজারে ৭০-৯০ টাকার চার্জারের গায়ে ও ২অ্যাম্পিয়ার লেখা থাকে,ওগুলা ব্যাবহার করবেন না।

★আপনি যখন ফোন চার্জে লাগাবেন,দয়া করে তখন ফোন ব্যাবহার করবেন না।অনেকেরই এমন খারাপ অভ্যাস আছে যে ফোন চার্জে কানেক্ট করে নেট ব্রাউজিং করে বা গেম খেলে,ভাই এই অভ্যাস টা এখন থেকে আপনাকে ছেড়ে দিতে হবে।কারন প্যারাসিটিক চার্জ ফোনের ব্যাটারির জন্য ক্ষতিকর।তবে যদি গুরুত্বপূর্ণ কল আসে তাহলে ডিসচার্জ করে কথা বলুন।

★আপনার ফোনের ব্যাটারিকে অন্ততপক্ষে এক থেকে দেড় মাস পর একবার ক্যালিব্রেশন করুন।#ক্যালিব্রেশন_করার_নিয়ম: যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনার ফোন ০% চার্জে না এসে বন্ধ হয়ে যায় ততক্ষণ ব্যাবহার করেন।যদি ০% চার্জ এ এসে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ফোন আবার অন করার চেষ্টা করুন,যদি অন না হয় তাহলে তো ভালো মানে আর কোনো চার্জ নাই আপনার ফোনে,আর যদি অন হয় তাহলে পূনরায় ব্যাবহার করতে থাকুন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত।সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হয়ে গেলে বন্ধ অবস্থায় ১০০% পর্যন্ত চার্জ করুন,১০০% না হওয়া পর্যন্ত ফোন অন করবেন না।আরেকটু ভাল ফলাফলের জন্য ১০০% চার্জকে আবার ০% এনে আরেকবার ১০০% চার্জ করুন।

★আপনার ফোন অযথা সারারাত চার্জে লাগিয়ে রাখবেন না।অনেকেরই এমন অভ্যাস আছে রাতে ফোন চার্জে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।মাঝে মধ্যে এমন হলে সমস্যা নাই,তবে প্রতিদিন এমনটা করবেন না।যদিও সকল স্মার্টফোনেই ওভার চার্জিং প্রোটেকশন এর এক বিশেষ সার্কিট থাকে,তবুও ব্যাটারির ক্ষমতা আস্তে আস্তে কমে যেতে পারে।

★অনেকসময় দেখা যায় ফোন চার্জে দিলে অতিরিক্ত গরম হয়।আসলে ভাই সকল ফোনই চার্জে দিলে গরম হয়।তবে একটা কথা বলি, আপনি অনেক্ষণ ব্যাবহারের পর সাথে সাথেই ফোন চার্জে লাগাবেন না,কারন আপনি যখন অনেক্ষণ ব্যাবহার করেন তখন তো ফোন গরম থাকেই,তাই তখনই যদি চার্জে লাগান তাহলে তো টেম্পারেচার বাড়বেই,তাই হেভিইউজের পর ফোন ১০ মিনিট মত ঠান্ডা করে চার্জে লাগান কিছুটা হলেও গরম কম হবে।

★আপনি যদি খেয়াল করেন যে আগের তুলনায় বেশি সময় নিচ্ছে চার্জ হতে তাহলে play store থেকে “ampere” নামক অ্যাপটি ডাউনালোড করে দেখেন অ্যাম্পিয়ার ঠিক আছে কিনা।যদি ঠিক না থাকে তাহলে চার্জারের ক্যাবল চেঞ্জ করে ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে এমন ক্যাবল কিনুন।কারন ব্যাটারি চার্জ হতে যতটুকু অ্যাম্পিয়ার দরকার ততটুক অ্যাম্পিয়ার যদি ক্যাবল সরবারহ করতে না পারে তাহলে আপনার ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে।

★ফোন ব্যাবহার করার সময় যদি ফোন মাত্রাতিরিক্ত গরম হয়,তাহলে ফোন ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকুন ও ৮-১০ মিনিট বন্ধ করে রেখে আবার ব্যাবহার করুন।

এই নিয়ম অনুসরণ করলে আশা করি আপনার ব্যাটারির স্বাস্থ ঠিক থাকবে।

লেখার মধ্যে কোনো প্রকার ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।ভালে থাকবেন সবাই…..ধন্যবাদ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Previous Post

Wireless Bluetooth headphones Music Hat | অয়ারলেস ব্লুটুথ মিউজিকাল টুপি

Next Post

Ourspop B20 ওয়্যারলেস ব্লুটুথ স্পোর্ট মিনি স্পিকার পর্যালোচনা

Related Posts

মোবাইল ডিসপ্লে কোনটা ভালো? AMOLED vs IPS LCD vs OLED vs Retina

আমরা যখন মোবাইল কিনি তখন বেশিরভাগ মানুষ যে জিনিষ দেখে কিনে তা হচ্ছে স্মার্টফোনের র‍্যাম, ইন্টার্নাল স্টোরেজ কিংবা…
পড়ুন